Header Ads Widget




 

সিদ্ধিরগঞ্জে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:


 সিদ্ধিরগঞ্জে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০


সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের ভেতর চার্মিন প্যাকেজিংয়ের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ নিয়ে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের  মধ্যে হামলা পাল্টা হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। আহতদের মধ্যে ইকবাল নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা পাল্টা হামলার ঘটনায় পাল্টা পাল্টি তিনটি অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আদমজী ইপিজেডের ভেতর চার্মিন প্যাকেজিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ চলছে। এই প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ পায় হিরা নামে এক ঠিকাদার। কিন্তু এই কাজ হাতিয়ে নেয়ার জন্য তাঁতীলীগের নেতা গুজা লিটন, এক ডজন মামলার আসামী সন্ত্রাসী সেলিম মজুমদার, আবুল, মাদক ব্যবসায়ি মনির খান, আলাউদ্দিন, যুবলীগ নেতা খোকন হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী সোহেলগংরা তৎপরতা চালিয়ে আসছে বেশ কয়েকদিন ধরে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে গুজা লিটন, সেলিম মজুমদার, আবুল, মনির খান, আলাউদ্দিন, সোহেলসহ ১০-১২ জন ঠিকাদার হিরার ম্যানেজার ইকবালকে মারধর করে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গুজা লিটন বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়ায় হিরার পার্টনার আক্তার হোসেন বাহিনী। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হয়েছে ইকবাল, গুজা লিটনসহ কমপক্ষে ১০ জন। এরমধ্যে ইকবালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুজা লিটন স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। কয়েকজন নারায়ণগঞ্জে দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।


আদমজী ইপিজেডের ঠিকাদার হিরা জানায়, চার্মিন প্যাকেজিং নামে একটি নির্মাণাধিন গার্মেন্টস কারখানায় ইট, বালু সরবরাহ, রং ও টাইলস বসানোর কাজ পেয়েছি। কাজ প্রায় শেষের পথে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক সন্ত্রাসী লিটন ওরফে গুজা লিটন কাজটি জোর করে নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে লিটন ও ডজনের অধিক মামলার আসামি সেলিম মজুমদারের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন লোক  ইপিজেডের ভিতরে চার্মিন গার্মেন্টসে গিয়ে আমার ম্যানেজার ইকবালকে টেনে হেঁচড়ে বেধড়ক মারধর করে। তাকে রক্ষা করতে গেলে ইব্রাহীম ও শামীমকেও মরধর করা হয়। পরে তারা সুমিলপাড়া গিয়ে যুবলীগ নেতা আক্তার হোসেনের অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।

আক্তার হোসেন বলেন, হিরার সঙ্গে আমিও ইপিজেডে কাজ করি। এ কারণে আমার অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। আহত ইকবালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আর ইব্রাহীম ও শামীমকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুমিলপাড়া মুনলাইট সিনেমা হলের পেছনে ও সুমিলপাড়া আইলপাড়া এলাকায় শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার কার্যালয় ভাংচুর করে সন্ত্রাসী গুজা লিটন ও সেলিম মজুমদার বাহিনী। এসময় তারা কার্যালয়ে রক্ষিত বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, শেখ রাসেল, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছবি ভাংচুর করে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক লিটন ওরফে গুজা লিটন বলেন, চার্মিন গার্মেন্টসের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ আমি পেয়েছিলাম। হীরার সঙ্গে মিলে আক্তার জোর করে নিয়ে নেয়। আমি প্রতিবাদ করায় বেলা তিনটার দিকে কদমতলী এলাকার নামধারী যুবলীগ নেতা জীবন ও আক্তারের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে মারধর ও ভাংচুর করে। 

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ জানা গেছে, গুজা লিটন এলাকায় বিশাল মাদক ব্যবসায়ী চক্র গড়ে তুলেছে। দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস নিয়ন্ত্রন করছে লিটন। এখন তিনি নজর দিয়েছেন আদমজী ইপিজেডে। নিয়ন্ত্রন নিতে চায় বিভিন্ন কারখানা। নির্মাণাধিন চার্মিন গার্মেন্টসটির কাজ ও নিয়ন্ত্রন নিতে বেশ কিছু দিন ধরে লিটন ও সন্ত্রাসী সেলিম মজুমদার জোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে দলীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে ঠিকাদার হিরার ম্যানেজার ইকবালকে মারধর করে কাজ না করার জন্য হুশিয়ারি দেয়। শুধু ইপিজেডই নয় আরো বিভিন্ন উৎস নিয়ন্ত্রন নেওয়ার পাঁয়তারা করছে লিটন ও সেলিম মজুমদার বাহিনী। তাদের সাথে রয়েছে মাদক সম্রাট মনির খা, যুবলীগ নেতা খোকন হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী সোহেলসহ অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী। এই বাহিনী এলাকার মাদক কেনা-বেচা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শওকত জামিল জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। তবে পুলিশ আসার আগেই তারা চলে যায়। আমরা এসে কোন সংঘর্ষ পাইনি। তবে দুইটি অফিস ভাংচুর দেখতে পেয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে দুই অফিস এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত রয়েছে। এ ঘটনায় কোন পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Post a Comment

0 Comments